ব্রাজিল সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত তথ্য

ব্রাজিল সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত তথ্য

আপনারা জানেন প্রত্যেকটা দেশেরই একটা আলাদা বিশেষত্ব আছে। আর প্রত্যেকটা দেশের নিজস্ব কিছু নিয়ম কানুন থাকে। তবে এমন কিছু দেশ রয়েছে যে দেশগুলো তাদের অদ্ভুত অদ্ভুত সব কাজের জন্য আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেসব দেশের মধ্যে একটি দেশ ব্রাজিল। এই দেশ যত বড় এখানকার পুরুষের মহিলারাও তেমনি কিছু বড় বড় কর্মকাণ্ড করে দেখিয়েছে। এগুলো আবার যেনতেন কোন কর্মকান্ড নয় বরং এগুলো একটা অন্য লেভেলের এই কর্মকাণ্ড। তাই আজকের এই আর্টিকেলে ব্রাজিল দেশের কিছু অদ্ভুত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আলোচনা করবো যেগুলো দেখার কিংবা শোনার পর আপনাদের মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে।

সমকামিতা

ব্রাজিলে বড় বড় লোকদের বাস। সেখানকার মানুষেরা বড় বড় চিন্তাধারার মানুষ। তারা কোন ভেদাভেদ করে না। আর এখানকার সরকার ও বিদ্রোহীদের পুরোপুরি বিরোধিতা। করে আর এই জন্যই হয়তো বা ব্রাজিলের সরকার সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সমকামিতাকে আইনিভাবে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এখানে কোন মেয়ের সাথে কোন মেয়ের অথবা কোন ছেলের সাথে কোন ছেলের বিয়েতে এটা খুবই সাধারন বিষয়। তবে এই জিনিসটাই যদি আমাদের এশিয়ার কোন লোক দেখে ফেলে তাহলে তাদের চোখ পুরোপুরি ছানাবড়া হয়ে যাবে। 

জেন্ডার চেঞ্জ

বন্ধুরা ব্রাজিলের বেশিরভাগ লোকেরই তাদের জেন্ডার চেঞ্জ করে থাকে। আর তাই এই বিষয়টা মাথায় রেখে এখানকার সরকার একটা অদ্ভুত আইন জারি করে দিয়েছে। ২০০৮ সালের পর থেকে যতগুলো জেন্ডার চেঞ্জ করা হয়েছে সবগুলোর খরচে ব্রাজিলের সরকার বহন করেছে। আর পরবর্তীতে জেন্ডার চেঞ্জের জন্য যত টাকা খরচ হবে সেটাও ব্রাজিলের সরকারি বহন করবে। এই ব্যাপারে ব্রাজিল সরকার জানিয়েছে যে মানুষ গরিব কে বড়লোক হোক সবার ইচ্ছা পূরণ করার অধিকার থাকা উচিত। আর এই কারণে যদি কোন ছেলে মেয়ে হতে চাই বা মেয়ের ছেলে হতে চায় তাহলে অবশ্যই হবে। টাকা ব্রাজিল সরকার দেবে। কি আর বলব বন্ধুরা ব্রাজিলে তো সবই।  

আরও দেখুনঃ মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর

মহিশে চড়ে অপরাধীদেরকে ধরা 

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে অ্যামাজনের পুরো ৬০% জঙ্গল ব্রাজিলের অংশে রয়েছে। তবে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না যে জঙ্গলের কাছে যেসব বসতি গড়ে উঠেছে সেখানে যদি কোন অপরাধ সংঘটিত হয় তাহলে সেটা তদন্ত করার জন্য ব্রাজিলের পুলিশ মহিশে চড়ে সেখানে যায়। আর এই ব্যাপারে ব্রাজিলের পুলিশ জানিয়েছে যে আমাজন জঙ্গল অনেক বিপদজনক পশু রয়েছে। এই কারণে তাদের সাথে মোকাবেলা এবং তাদের সঙ্গে বাঁচার জন্যই তারা মহিশে চড়ে সেখানে অপরাধীদেরকে ধরতে যায়।

অ্যামাজন জঙ্গল বিপদজনক ভবিষ্যতে অনেক ভয়ঙ্কর অ্যানাকোন্ডা ও আছে।  আর এইসব কথা মাথায় রেখেই ওখানকার প্রশাসন এমন একটা অদ্ভুত নিয়ম বানিয়েছে।

নবজাতক শিশুকে দুধ পান না  করা 

ব্রাজিলে যখন কোন মহিলা কোন নবজাতক শিশুকে জন্ম দেয় তখন থেকে দুধ পান করায় না। কেন দুধ পান করায় না সেটাও একটু শুনুন, আসলে এখনকার মহিলাদের কথা হলো শিশুকে দুধ খাওয়াওলে তাদের সুন্দর ফিগার নষ্ট হয়ে যাবে আর তাদের শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। আর এই কারণেই তারা এমন করে। যেসব নবজাতক শিশুরা মায়ের দুধ খেতে পারে না তাদের জন্য ব্রাজিল সরকার অন্য মেয়েদের দুধের ব্যবস্থা করে দেয়। সত্যি অসাধারণ ব্যাপার, ব্রাজিল সরকার দেখি সবার জন্য সুবিধা রেখেছে। 

পশুর সঙ্গে সঙ্গম

ব্রাজিলের ৩৫ শতাংশ পুরুষ এবং মহিলারা পশুর সঙ্গে সঙ্গম করে থাকে। আপনার বিশ্বাস না হলে এই ব্যাপারে গুগলে সার্চ করে দেখতে পারেন। সেখানে আপনারা আরও বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।

রাস্তায় সাপ এর ঘোরাফেরা

ভারতের গলিতে যেমন আপনারা গরু মহিষ এবং রাস্তায় কুকুর দিয়ে চলাফেরা করতে দেখতে পাবেন তেমনি ব্রাজিলের রাস্তায় আপনারা খুব সহজেই সাপ দেখতে পাবেন। তাই ব্রাজিলের রাস্তায় যদি আপনারা বিশাল আকার অজগরকে চলতে দেখেন তাহলে সেটাকে খুব সাধারণ বিষয় মনে করবেন। কেননা খনকার লোকেরা এইসব দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।

আরও দেখুনঃ Contact Us Page on Blogger - ব্লগারে যোগাযোগ পেজ তৈরী

কয়েদিদের দিয়ে সাইকেল চালানো ও বই পড়া

ব্রাজিলে কয়েদিদের দিয়ে সাইকেল চালানো হয়। আর সেই সাইকেল চালানোর সাহায্যে ওখানকার জেলের ম্যানেজমেন্ট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে থাকে। আর যে কয়েদি যত জোরে সাইকেল চালিয়ে অধিক বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এগিয়ে থাকে সে কয়দিন শাস্তির সময় ততটাই কমিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া ওখানকার কয়েদিদের দিয়ে বই পরিয়ে রিপোর্টিং এর কাজ করানো হয় আর। যে কয়টি যত ভালো করে বই পড়ে ভাল ভাবে রিপোর্টিং করে সে কয়দিনে সেই মোতাবেক শাস্তি কমিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে যে সম্পূর্ণ একটি বই পড়ে ফেলার জন্য একজন কয়দিন শাস্তির বয়স চারদিন করে কমিয়ে দেয়া হয়। এই কারণেই হয়তো ব্রাজিলে এত এত অপরাধ সংগঠিত হয় আর ব্রাজিলের প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে খুন হয়। 

সবচেয়ে বড় চুরি 

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চুরি ২০০৫ সালের ৬ আগস্ট ব্রাজিলেই হয়েছিল। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই চুরিটা গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে সবচেয়ে বড় চুরি রেকর্ড তৈরি করেছে। এর চুরি ১০ জন লোক মিলে করেছিল। এই চুরির জন্য ২৫৬ ফুট সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছিল। চুরির অ্যামাউন্ট সেই সময় ১০ মিলিয়ন ডলারের সমান ছিল অর্থাৎ আজকে আমাদের ৫.৭ কোটি ৩৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা সমান। আর এইসব টাকা চোরেরা পাঁচটা বাক্সে ভরে ছিল। 

অবাধ চলাফেরা

পৃথিবীর সবচাইতে বেশি নোট বিচ ও আপনারা ব্রাজিলের দেখতে পাবেন। এখানে যে কোন মেয়েকে পোশাক ছাড়া খালি গায়ে দেখতে পাওয়াটা খুবই সাধারণ একটি বিষয়। এখানে শুধু মেয়েরানা পুরুষদের এখানে খালি গায়ে মেয়েদের সাথে মজা করে ঘুরতে দেখতে পাওয়াটা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। 

ফুটবল প্রেম

ব্রাজিলের লোকরা ফুটবল ছাড়া অন্য কোন খেলাকে অতটা গুরুত্ব দেয় না। এখানকার লোকদের ফুটবল খেলার প্রতি একটু বেশি দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষ করে এখানকার মেয়েদের। আর এই কারণে অনেকবারই ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ চলাকালীন সময়ে তাদের গাঁয়ের পোষাক ছুড়ে ফেলতেও দেখা গেছে। 

পুরুষত্ব প্রমাণ

ব্রাজিলের যখন কোন একটা ছেলে বড় হয় তখন তাকে একজন পুরুষ হওয়ার জন্য নিজের পুরুষত্ব প্রমাণ করতে ব্রাজিলের একটি অদ্ভুত প্রথা পালন করতে হয়। এই প্রথম অনুযায়ী ব্রাজিলের পুরুষেরা নিজের শরীরে বন্য পিপড়ার কামড় খাওয়ায়। প্রথমে জঙ্গলে গিয়ে অন্য বন্য পিপড়া গুলো খুজে আনে। এরপর পিঁপড়া ভরা ব্যাগ গুলোর মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, এরপর তাদের যে ব্যথা অনুভূত হয় তা শুধু তারাই জানে। তবে এই ধরনের প্রথার প্রচলন ব্রাজিলের সর্বোত্র নেই। এটা শুধুমাত্র এখানকারে গ্রামীণ এলাকাগুলোতেই দেখতে পাওয়া যায়। 

আরও দেখুনঃ ক্লাউডফ্লেয়ার কী এবং এটি কেন ব্যবহার করা উচিত?

জাপানি লোক

ব্রাজিলের সবচাইতে বেশি জাপানি লোকেরা থাকে। অর্থাৎ জাপানের পরে সবচেয়ে বেশি জাপানি লোকেরা ব্রাজিলেই আছে। ব্রাজিল একটি আমেরিকান দেশ কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানে বিভিন্ন জায়গায় আপনারা জাপানি লোকদেরকে দেখতে পাবেন। এখানে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন জাপানি রয়েছে।

পোশাক স্বাধীনতা

ব্রাজিল পৃথিবীর একমাত্র একটি দেশ যে দেশে সেখানকার মেয়েরা সবচেয়ে ছোট এবং কম কাপড় পড়ে থাকে। অর্থৎ ছোট কাপড় পরার দিক থেকে এখানকার মেয়েরা প্রথম স্থানে রয়েছে।  

এলিয়েন গবেষণা

ব্রাজিলের গবেষকরা মনে করে থাকে অ্যামাজন জঙ্গলের যে ৬০ ভাগ জঙ্গল ব্রাজিলের অংশে রয়েছে সেখানে এলিয়েনরা আসে। যে কারণে ওই এলাকা দিয়ে সবসময় গবেষণা চলতেই থাকে। তবে এখনো গবেষকরা এ বিষয়ে তেমন কোনো প্রমাণ পায়নি।

এই ছিল ব্রাজিল সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত তথ্য। আশা করছি আপনাদের সবার এই আর্টিকেল টি ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবারও দেখা হবে পরবর্তী আর্টিকেলে। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

Comments