গুগল অ্যাডসেন্স কি? এবং অ্যাডসেন্স দিয়ে কীভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়?



ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিক মনিটাইজ করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এবং এদের বেশিরভাগই গুলোই থার্ড পার্টি বিজ্ঞাপন সম্পর্কিত। বর্তমান সময়ে অনেক গুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে যার মাদ্ধমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এসব প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় হলো গুগল অ্যাডসেন্স।

২০০৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে গুগলের এই বিজ্ঞাপন প্রোগ্রামটি চালু হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি ইন্টারনেটে সর্বাধিক জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন প্রোগ্রাম। ট্র্যাফিক মনিটাইজ করার জন্য অ্যাডসেন্স ওয়েবমাস্টার এবং সাইটের মালিকদের জন্য একটি ভাল সুযোগ করে দিয়েছে।  প্রতি বছর গুগল তার প্রকাশকদের জন্য প্রায় $১০ বিলিয়ন ডলার দেয়। চলুন তাহলে দেখে আসি অ্যাডসেন্স কী? এবং আমরা কীভাবে অ্যাডসেন্স দিয়ে অর্থো উপার্জন করতে পারবো?


গুগল অ্যাডসেন্স এর সুবিধা

  • বিপুল সংখ্যক প্রকাশক এবং বিজ্ঞাপনদাতা। এখন অব্দি ১০ কোটিরও বেশি ওয়েবসাইট গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করছে।
  • বিজ্ঞাপনদাতা এবং প্রকাশক উভয়ের জন্য সর্বোচ্চ সুরক্ষা এবং স্বচ্ছতা। এটি অ্যাডসেন্সের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। গুগল উভয় পক্ষের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি সবার জন্য সুন্দর ভাবে পরিচালোনা করে। এবং ব্যবহারকারী  Google Analytics এর মাধ্যমে সমস্ত তথ্য ট্রাক করতে পারবেন।
  • বিভিন্ন ফর্ম্যাট এর বিজ্ঞাপন। অ্যাডসেন্সে বিজ্ঞাপনদাতারা বিভিন্ন ফর্ম্যাট এর এবং বিভিন্ন আকারের বিজ্ঞাপন চালাতে পারবেন। প্রকাশক হিসাবে, আপনি বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ধরণের সাথে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পারবেন এবং কোনটির ,মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপার্জন হচ্ছে তা দেখতে পারবেন।

টিপ: অন্যদের ওয়েবসাইট গুলোতে দেখুন কোন সাইজের এড সর্বাধিক ব্যবহার হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের নিজস্ব গবেষণায় আমরা্ ৬৩৩,০০০ এরও বেশি বিজ্ঞাপনদাতা এবং প্রকাশকদের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে আমরা জানতে পেরেছি যে 728x90 এবং 300x250 সাইজের এড গুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। 


অ্যাডসেন্স কীভাবে কাজ করে?

অ্যাডসেন্স চালুর প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ। প্রথমে একটি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।  এরপর আপনার ওয়েবসাইটের পেজ গুলোতে অ্যাডসেন্স থেকে পাওয়া কোড বসিয়ে দিন। কাজ শেষ,এবার গুগল আপনার কোড বসানো পেজ গুলোতে বিজ্ঞাপনগুলি প্রদর্শন করবে। বিজ্ঞাপনগুলি সাধারণত ২ ধরণের হয়। এক, ওয়েবসাইটের সামগ্রিক বিষয় এর সাথে প্রাসঙ্গিক। দুই, ব্যবহারকারীদের পূর্ববর্তী অনুসন্ধানের অ্যালগরিদমের উপর ভিত্তি করে।

ভিজিটররা ওয়েবসাইটের সেই বিজ্ঞাপনগুলি ক্লিক করলেই আর্নিং শুরু হয়ে যাবে। বলতে পারেন আর্নিং এর বেশির ভাগই আসে এড ক্লিক থেকে। গুগল অ্যাডসেন্স প্রতিটি ক্লিকের ব্যয় এবং উপার্জন ভাগ করে নেওয়ার ভিত্তিতে কাজ করে।

টিপ: গুগলের সাথে চালাকি পরিচিতদের মাধ্যমে ইল্যিগ্যাল ক্লিক নিবেন না বা ভিজিটর কে ক্লিক এর জন্য উৎসাহিত করবেন না। বর্তমান সময়ে ফেসবুকে অনেক ক্লিক এক্সচেঞ্জ গ্রুপ দেখা যায়। কোন ভাবেই ক্লিক এক্সচেঞ্জ করবেন না। এতে হয়তো সাময়িক উপার্জন বাড়বে কিন্তু কিছুদিন পর গুগল আপার সাইটে এড লিমিট করে দিবে। যার ফলে সাইটে আর এড লাইভ থাকবে না।


অ্যাডসেন্স দিয়ে কেমন উপার্জন করতে পারবেন?

গুগল প্রতি এড ক্লিক এর বিজ্ঞাপনদাতাদের চার্জ। প্রকাশকরা ক্লিকের পরিমাণের ৬৮% অর্থ পান।

আপনি যে টাকাটি পান তা Keyword Value এবং সিপিসির উপর নির্ভর করে। উধাহরণ স্বরুপ, প্রতি ক্লিক সিপিসি $০.২০ থেকে $১৫ ডলার হতে পারে।


সর্বাধিক লাভজনক টপিক খুজে বের করার দুটি পদ্ধতি রয়েছেঃ

সিপিসি ম্যাপ টুলঃ সিপিসি ম্যাপ টুল এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন কোন নিশে সিপিসি বেশি দিচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ব্যয়বহুল দুটি নিশ হলো বীমা, অনলাইন শিক্ষা। আপনি যদি কেবল কোনও ব্লগ শুরু করতে এবং বিষয়গুলি কভার করার জন্য বেছে নিতে চলেছেন তবে এই সংখ্যাগুলি আপনার পক্ষে অত্যন্ত কার্যকর হবে।

কিওয়ার্ড ম্যাজিক টুলঃ এর মাধ্যমে আপনি একটি নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড এর সিপিসি জানতে পারবেন।


ট্র্যাফিকই মূল মন্ত্রঃ

সর্বোপরি ওয়েবসাইটের উপার্জন ট্রাফিকের পরিমাণ এর উপর নির্ভর করে। ভালো নিশ নিয়ে কাজ করলে এবং সঠিক ভাবে এড প্লেস করলে খুব সহজেই আপনি অনেক বেশি উপার্জন করতে পারবেন। মোদ্দাকথা মোটা অঙ্কের উপার্জন এর জন্য আপনার অনেক ট্রাফিক এর প্রয়োজন তাই নিশটা খুবই গুরুত্বপুর্ণ। 

আপনি যে বিষয়ে খুব বেশি জানেন সে বিষয়েই ওয়েবসাইট তৈরি করুন। এর ফলে আপনি খুব সহজেই ভালো মানের  কন্টেন্ট লিখতে পারবেন। সবচেয়ে ভালো হয় ১৭/১৮ টা ১০০০ প্লাস শব্দের পোস্ট করার পর অ্যাডসেন্সে নিয়ে আগানো। এতে করে আপনি একটা মোটামুটি আকারের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।


সারসংক্ষেপ

আপনি গুগল অ্যাডসেন্সের সাহায্যে বেশ ভাল অর্থ উপার্জন করতে পারবেন তবে এতার মাধ্যমে আপনি দ্রুত ধনী হতে চাইলে ভুল করবেন। কিন্তু আপনি চাইলে কিছু পদ্ধতি অবলম্বণ করে আপনার উপার্জন কে  স্থিতিশীল করতে পারবেন। 

  • যে বিষয়টি ভালোবাসেন এবং যে বিষয়টি ভালো জানেন সেই বিষয়টি নিয়ে লিখুন।
  • ওয়েবসাইটে নিয়মিত আপডেট দিন। একটা চেইন মেন্টেন করে লিখুন। 
  • ইনভ্যালিড ক্লিক থেকে বিরত থাকুন। 
  • ভালো সিপিসি পেতে সর্বাধিক লাভজনক নিশ খুজে বের করুন। 

আশাকরি পোস্ট টি আপনার ভালো লেগেছে এবং আপনার অনেক কাজে লাগবে। আমরা সবসময় চেষ্টা করি পাঠকদের মধ্যে সহজ ভাবে পুরো বিষয় তুলে ধরা। আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

ব্রাজিল সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত তথ্য